খাবার টেবিল কিংবা ঈদ মার্কেট, ভারতীয় সিরিয়ালের প্রভাব বাংলাদেশের সব জায়গায়। গত বছর ঈদের বাজারে আধিপত্য ছিল ভারতীয় সিরিয়ালের নামধারী ‘পাখি’ বা ‘কিরণমালা’র মতো পোশাক। এ বছর রাজশাহীর বাজারে তেমন বিশেষ নামধারী পোশাক নেই, তবে ছেলেদের জন্য আছে দোকানিদের নাম দেওয়া ‘ভাইজান’ শার্ট। মেয়েরা ঝুঁকেছেন লং ফ্লোর টাচিং পোশাকের দিকে। রাজশাহীর আরডিএ মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, নতুন নামধারী কোনো পোশাক বাজারে নেই। তবে বাহারি ডিজাইনের লং পোশাক মেয়েদের আকর্ষণের মূলে রয়েছে। টপস, গাউন, ফ্রগ কিংবা ওয়ান পিস যাই হোক না কেন- এবার ঈদ কেনাকাটায় মেয়েদের পছন্দ লম্বা পোশাক। মা-মারিয়াম ফ্যাশনের মনির হোসেন জানিয়েছেন, এবার ঈদে ‘পাখি’ বা ‘কিরণমালা’র মতো নামধারী কোনো পোশাক আসেনি। তবে প্রজাপতি রাখি, ডালি ক্রেতাদের বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টি করছে। এগুলো কোনো বিশেষ পোশাক নয়। টপস, ফ্রগ, ওয়ান পিস, গাউনের মতো পোশাকের অন্য নাম। ঈদ যত এগিয়ে আসছে, রাজশাহীর মার্কেটগুলো তত জমতে শুরু করেছে। গত দুই-তিন দিন থেকে বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নগরী ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলো থেকে আসতে শুরু করেছেন মানুষ। ফলে দোকানিরাও তাদের সংগ্রহে থাকা পোশাকের পসরা খুলে বসেছেন। দোকানি রফিকুল ইসলাম জানান, দেশি পোশাকের পাশাপাশি ভারতীয় বিভিন্ন পোশাক তারা সংগ্রহ করেছেন। ক্রেতারা এসে সেই চাহিদাও জানাচ্ছেন। বিক্রি গত তিন দিন থেকে ভালো। রমজানের মাঝামাঝি এসে কেনাকাটায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন মানুষ। গরম উপেক্ষা করে চলছে কেনাকাটা। চারঘাট থেকে ঈদের বাজার করতে আসা সামিনা বেগম জানান, দোকানিদের কালেকশন অনেক ভালো। তিনি তার পছন্দের শাড়ি কিনতে পেরেছেন। এবারের ঈদে মেয়েদের পোশাকের মধ্যে রয়েছে— জিপসি, টপস, ফ্রগ, কটি, ওয়ান পিস, লেহেঙ্গা, ফ্লোরটাচ ইত্যাদি। সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে পোশাকগুলো। ছেলেদের ভাইজান শার্ট হলো এক কালারের ভি গলার বিশেষ শার্ট। অনেকটা ফতুয়ার মতো দেখতে এই শার্ট। ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যেই বিক্রি হচ্ছে এই বিশেষ পোশাক। ভাইজানের চাহিদা বাড়ছে বলেও জানান বিক্রেতারা।
পিয়েটা ফ্যাশনের শরিফুল ইসলাম জানান, এবার ঈদে মেয়েদের ফ্লোরটাচ গাউনের চাহিদা বেশি, পাশাপাশি ওয়ান পিস কামিজ। তবে গাউন হোক বা কামিজ হোক- মেয়েদের পছন্দ লম্বা ফ্লোরটাচ পোশাক। এ ছাড়াও কটি দেওয়া ফ্লোরটাচ পোশাকও টানছে ক্রেতাদের। ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মেঘলা ও চৈতী বলেন, ঈদের জামা কিনতে এসেছি। আমরা দুই বোনই গাউন কিনলাম। এবার ‘পাখি’ বা ‘কিরণমালা’র মতো কোনো পোশাক নেই। তবে এ বছর লম্বা অর্থাৎ ফ্লোরটাচ পোশাকই বেশি চলছে। অসাম গার্মেন্টেসের মিদুল জানান, আগের বছরের তুলনায় বিক্রি অনেক কম। প্রধান কারণ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ।
- ব্রেকিংবিডিনিউজ২৪ / ১২ জুন ২০১৮ / তানজিল আহমেদ